‘সংসারের ঘানি টানতে টানতে ক্লান্ত আমি। কিন্তু কিছুই করার নাই। সংসারে চার-চারটি মুখের খাবার আমাকেই প্রতিদিন জোগাড় করতে হয়।’ কথাগুলো বলছিলেন ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার দুধসর ইউনিয়নের চান্ডিপুর গ্রামের ভ্যানচালক মো. আদিল উদ্দিন।
তিনি বলেন, বয়স এখন ৭৫। এলাকায় ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। তবে ভিক্ষা করা মহা পাপ, তাই ভিক্ষা করি না। বয়সের ভারে কুঁজো হয়ে গেছি। তাই লোকও বেশি টানতে পারি না। আবার বয়সের ভারে ভ্যান আস্তে চালাই বলে মানুষ আমার ভ্যানে ওঠেও কম।
জানা যায়, আদিল উদ্দিনের সংসারে বৃদ্ধা স্ত্রী, প্রতিবন্ধী ছেলে, বিধবা মেয়ে ও তিনি নিজে আছেন। তিন মেয়ে বিবাহিত। অন্য ছেলে ঢাকায় থেকে পড়াশুনা করেন। কিন্তু তাদের খোঁজ রাখেন না। সংসারে একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি তিনিই।
বয়সের কারণে সোজা হয়ে হাঁটতে পারে না। দিনে ৪০-৫০ টাকা আয় হয়। তাই দিয়ে কোনোরকম সংসার চলে। কোনো কোনো দিন না খেয়েও থাকতে হয়। সম্প্রতি বিষয়টি জানতে পেরে ছেলেকে একটি প্রতিবন্ধী কার্ড দিয়েছেন শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওসমান গণি।
ইউএনও ওসমান গণি বলেন, আদিল উদ্দিনকে খবর দিলে তিনি আমার অফিসে আসেন। আলাপকালে তার পরিবারের বিস্তারিত তথ্য জানতে পারি। এই বয়সে সংসারে বিশ্রামে থাকার কথা, নাতি-নাতনি নিয়ে আনন্দে থাকার কথা। কিন্তু তার ভাগ্যটা অন্যরকম। আগামী ২ মাস সংসার চালানোর মতো নগদ অর্থ তাকে দিয়েছি। আর লোকটিকে কিভাবে স্থায়ীভাবে আয়ের ব্যবস্থা করে দেয়া যায় সেটাই ভাবছি।